স্মার্টফোন হ্যাক – বর্তমান এই ডিজিটাল বিশ্বে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ধিরে ধিরে বেরই চলছে। সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে স্মার্টফোন হ্যাকিং, হাতিয়ে নিচ্ছে বাক্রিগত তথ্য, বিপদে পরছেন সাধারণ ব্যবহারকারী।
স্মার্টফোনে অনেক গুরুত্ব পুণ্য ফাইল, বাক্তিগত ও পারিবারিক ফাইল থাকে। হ্যাকারগন এই ফাইল গুলো হাতিয়ে নেয় এরপর গুরুত্ব বুঝে মোটা অংকের টাকা দাবি করে বসে। আর এই হ্যাকিং বেশি হয়ে থাকে অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলোতে। এই কারণেই অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলো হ্যাকার এবং স্ক্যামারদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
অনেকই বলে থাকেন যে আপনার ফোন হ্যাক হয়নি, কথাটা সত্য নয়। বিভিন্ন উপায়ে হ্যাকারগন, আপনার ফোন থেকে তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে, আপনি বুঝতে পারছেন না। অনেক আইটি বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন যে, Facebook, Twitter, Instagram ও TikTok এর মতো বড় বড় সোশ্যাল মিডিয়া গুলোও আপনার দেওয়া বাক্তিগত তথ্য পাচার করছে।
তো চলুন দেখে নেই, যে ভুলের কারণে স্মার্টফোন হ্যাক হতে পারে এবং হ্যাকিং থেকে মুক্তির উপায়।
যে ভুলের কারণে স্মার্টফোন হ্যাক হতে পারে
১. ফোনে ব্লটওয়ার রাখা
নতুন স্মার্টফোন কেনার পর তাতে বেশ কিছু বাই ডিফল্ট অ্যাপস ইন্সটল করা থাকে, এর মধ্যে কিছু অ্যাপস আছে যেমন: QuickTime, CCleaner, uTorrent, Adobe Flash Player ইত্যাদি, এই অ্যাপস গুলোকে বলা হয় ব্লটওয়ার। এগুলো যদি আপনার ফোনে থাকে তাহলে এখনি ডিলিট করে দিন। কারণ এই আপগুলোর মাধ্যমেই আপনার ফোনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে থাকে হ্যাকারগন ।
২. পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা
যে কোনো সময় আপনার ফোনটি হারিয়ে বা চুরি হতে পারে। এজন্য ফোন হারিয়ে গেলেও যেন আপনার বাক্তিগত কোন ফাইল দেখতে বা নিতে না পারে এর জন্য আপনাকে একটু Complex Password ও Auto Screen Lock ব্যবহার করতে হবে। ফোনটি অফ করে অন করার সময় যেন পাসওয়ার্ড অবশই প্রয়োজন হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৩. ডাউনলোড অ্যাপ
আমরা ইন্টারনেট থেকে ভিডিও, অডিও কিংবা ছবি ডাউনলোড করার জন্য বিভিন্ন ধরনের Thirds Party Download App ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু অনেক সময় এগুলো খেয়াল করা হয় না। এখুনি সেটিংস অপশনে গিয়ে দেখে নিন যে, কোন কোন ডাউনলোড অ্যাপ আপনার ফোনে ইন্সটল করা রয়েছে। আপরিচিত কোন Download App থাকলে তা এখুনি ডিলিট করে দিন।
আরও পড়ুনঃ
স্মার্টফোন হ্যাক হলে বুঝার উপায়
৪. পুরাতন অ্যাপস ডিলিট
আপনার স্মার্টফোনটিতে অনেক পুরাতন অ্যাপস থাকতে পারে যা খুব একটা ব্যবহার হয় না। এই অ্যাপস গুলো ম্যালওয়ার ভাইরাসের শিকার হতে পারে এজন্য এগুলো অতিসত্তর ডিলিট করে দিন।
৫. একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার
আমরা এতো এতো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করি। যার ফলে এতো পাসওয়ার্ড মনে রাখা সম্ভব হয় না । তাই আমরা যা করে থাকি তা হল Common Password ব্যবহার করে থাকি। আর এটাই হ্যাকারদের কাছে Plus Point , আবার অনেকেই আছেন যে একবার যে পাসওয়ার্ড দিয়েছেন তা আর পরিবর্তন করেন না, এটা মারাত্মক ভুল, যার কারণে হ্যাক হতে পারে আপনার সাধের স্মার্টফোন। তাই তথ্য সুরক্ষিত রাখতে কয়েকমাস পর পর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।
৬. অ্যাপ ইনস্টল
আমরা বাঙালী সর্ব ক্ষেত্রে বড়ই উদাসীন, ভাল মন্দর বাছ বিচার নেই। আমাদের হাতে থাকা স্মার্টফোনটি পরিচালনার জন্য ফোনে দেওয়া বাই Default App ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এটা পর্যাপ্ত নয়, তাই স্মার্টফোনে বাড়তি সুবিধা পেতে অনেক ধরনের App Use করি। এর জন্য আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে আপ ইন্সটল করে থাকি। এর ফলে, হ্যাকারগন এই Un-Authorize App গুলোতে ভাইরাস ছরিয়ে থাকে। সবচেয়ে নিরাপদ হল গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ইনস্টল করা। তাহলে ফোনের তথ্য সুরক্ষিত থাকার পাশাপাশি ম্যালওয়ার ভাইরাস থেকে রক্ষা পাবেন।
৭. ফ্রী ওয়াইফাই
Free Wi-Fi স্মার্ট ফোন হ্যাক হওয়ার অন্যতম কারণ। ফ্রী ওয়াইফাই ব্যবহারের জন্য আপনি জখুন ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক খুঁজেন তখুন আপনার ফোনে থাকা GPRS Auto ON হয়ে যায়। এর ফলে আপনার ফোনে থাকা সকল তথ্য Wi-Fi Router এ চলে যার।
৮. যেখানে সেখানে ক্লিক না করা
অনেক সময় দেখা যায় যে, Messenger অথবা Email এ অপরিচিত ও লোভনীয় অফার মেসেজ ও লিঙ্ক আসে সেখানে জয়েন করার জন্য উৎসাহ করা হয়ে থাকে । সেখানে ক্লিক না করা, এছাড়াও Email এ অনেক Spam মেইল আসে সেগুলো Unsubscribe করে Delete করে দেওয়া।
৯. APK File ব্যবহার
অনেক প্রয়োজনীয় অ্যাপ রয়েছে যা গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন সাইট থেকে এপিকে ফাইল (APK File ) ব্যবহার করে থাকি। তবে। APK ফাইল ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ এতে ফোন ম্যালওয়ারের শিকার হতে পারে।
১০. নীতিমালা ও শর্ত
প্রত্যেকটি অ্যাপস ডাউনলোড ও ইন্সটল করার সময় টামর্স এন্ড কন্ডিশনা দেওয়া থাকে যা আমরা পড়িনা তাতে কি লেখা আছে। কারণ বেশ কিছু অ্যাপস ব্যবহারের ক্ষেত্রে ফোনের বিভিন্ন তথ্য চেয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যদি শর্ত না পরে ইন্সটল করেন সেক্ষেত্রে বিপদে পড়তে পারেন।
0 Comments